প্রকাশিত: ২৪/১১/২০১৬ ৯:৩০ পিএম

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, মিয়ানমারের সরকার সে দেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের জাতিগতভাবে নির্মূলের চেষ্টা চালাচ্ছে।

ইউএনএইচসিআর অফিসের প্রধান কর্মকর্তা জন ম্যাককিসিক বলছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা পুরুষদের হত্যা করছে, শিশুদের জবাই করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং লুঠতরাজ চালাচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো মিয়ানমারের জাতিগত নিধনের ব্যাপারে এতদিন ধরে যে অভিযোগ করে আসছিল, এবার জাতিসংঘও সেই অভিযোগ করছে।

তবে মিয়ানমার সরকার বলে থাকে যে রোহিঙ্গারা সে দেশের নাগরিক নয়। তাদের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগও মিয়ানমার অস্বীকার করে থাকে।

image-7794

ম্যাককিসিক রাখাইন বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরের পরিস্থিতি বেশ গুরুতর। কিন্তু এই সমস্যার মূলে রয়েছে যে কারণ সেটি মিয়ানমারের ভেতরে।

তিনি বলেছেন, মূল সমস্যাটি হলো গত ৯ অক্টোবর নয় জন সীমান্তরক্ষীর হত্যার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমষ্টিগতভাবে শাস্তি দিচ্ছে। তাদের অমানবিক অত্যাচারে রোহিঙ্গারা নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে।

বিবিসির তরফ থেকে যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে মিয়ানমারে সত্যিই জাতিগত নিধন চলছে কি না, এর জবাবে মি. ম্যাককিসিক বলেন, এ নিয়ে আপনারা যা জানেন আমরাও তাই জানি। আমরা টিভিতে যা দেখি এবং যেসব রোহিঙ্গা আসছে তাদের কাছ থেকে যা শুনি তাতে মনে হচ্ছে এই অভিযোগ সত্য। এরা সবাই বেসামরিক মানুষ। নারী ও শিশু। আমাদের কাছে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা বলছেন, তারা ধর্ষণের কথা বলছেন। তারা তাদের প্রিয়জনকে হারানোর কথা বলছেন।

মি. ম্যাককিসিক জোর দিয়ে বলেন, সে দেশে ফেরার পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের দেখাশোনার ব্যাপারে বাংলাদেশে একটা দায়িত্ব রয়েছে। এরা কিন্তু দেশে ফিরে যেতে চান। ফিরে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়স্বজনকে খুঁজে বের করতে চান। কিন্তু তারা যতদিন বাংলাদেশে আছেন, ততদিন তাদের দেখাশোনা করতে হবে। তাদের জন্য খাবার এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

শরণার্থী সমস্যায় আক্রান্ত বাংলাদেশের জন্য সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, এখন সীমান্ত খুলে দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের জন্য একথা বলা খুব কঠিন হবে যে সীমান্ত খুলে রাখা হবে। এতে করে মিয়ানমারের সরকারকে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করা হবে এবং তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য, অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনে উৎসাহিত করা হবে।

তবে এরপরও শরণার্থীদের আগমনের বিষয়টিকে মোকাবেলা করেতেই হবে। আশ্রয়দাতা দেশ হিসেবে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি সদয় আচরণ করেছে। সরকার যে ব্যাপক সংখ্যায় রোহিঙ্গাদের পুশ ব্যাক করছে না, একে আমরা স্বাগত জানাই। সূত্র: বিবিসি

বিবার্তা/

পাঠকের মতামত

দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রাখাইন, নতুন আশ্রয়প্রার্থীর আশঙ্কায় বাংলাদেশ

নজিরবিহীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতির সম্ভাবনা না থাকায় ...

আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশাল সুযোগ’ পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

মিসরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফুল-ফান্ডেড স্কলারশিপ ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ...